Tuesday, May 24, 2016

এনালগ যুগ VS ডিজিটাল যুগ!

নালগ যুগ মানে আগেকার যুগের অভ্যাস এবং ডিজিটাল যুগ মানে বর্তমান যুগের অভ্যাসের কথা জানাচ্ছেন- রবিউল ইসলাম সুমন



এনালগ যুগ: ঘুম থেকে উঠে আমরা মুখ ধুইতাম
ডিজিটাল যুগ: ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে ঢুকি।  

এনালগ যুগ: খাবার আগে সবাই হাত ধুইত
ডিজিটাল যুগ: খাবার আগে সবাই সেলফি তোলে।  

এনালগ যুগ: বাসায় মেহমান এলে নাশতাপানি দিলে খুশি হইতো
ডিজিটাল যুগ: বাসায় মেহমান এলে ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড বলে দিলে বেশি খুশি হয়।  

এনালগ যুগ: কাউকে দীর্ঘদিন না দেখলে বলতাম, ছবি পাঠাইস
ডিজিটাল যুগ: কাউকে কয়েক দিন না দেখলেই বলি, ভিডিও কল দিস!  

এনালগ যুগ: দরকারি কোনো ডকুমেন্টস লাগলে কুরিয়ার করতে বলতাম
ডিজিটাল যুগ: দরকারি কোনো ডকুমেন্টস লাগলে বলি মেইল করতে।  

এনালগ যুগ: নিজের পরিচিতি বাড়াতে ভিজিটিং কার্ড বিতরণ করা হইতো
ডিজিটাল যুগ: পরিচিতি বাড়াতে ফেসবুক আর বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জারের লিংক শেয়ার করা হয়।  

এনালগ যুগ: বিনোদনের জন্য মাঠে গিয়ে ক্রিকেট, ফুটবল কিংবা ব্যাডমিন্টন খেলত
ডিজিটাল যুগ: বিনোদনের জন্য মোবাইলে ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস কিংবা ক্যান্ডি ক্রাশ গেইম খেলে।  

এনালগ যুগ: টাকা, কাপড়, খাবারএগুলোই সচরাচর মানুষ ভিক্ষা চাইত
ডিজিটাল যুগ: লাইক, কমেন্ট, শেয়ারএইগুলোই ইনবক্সে গিয়ে ভিক্ষা চায়।  

এনালগ যুগ: কারো সঙ্গে কথা বলতে মন চাইলে বলত, ফোন করিস
ডিজিটাল যুগ: কারো সঙ্গে কথা বলতে মন চাইলে বলে, ম্যাসেঞ্জারে নক দিস।  

এনালগ যুগ: বন্ধুবান্ধবদের কাছে খাতা-কলম বা বই কেনার জন্য টাকা ধার চাইত
ডিজিটাল যুগ: বন্ধুবান্ধবদের কাছে টাকা ধার চায় মোবাইলের এমবি কেনার জন্য।  

এনালগ যুগ: মুরব্বিদের সম্মান ও সবার কথা শুনে চললেই ভালো মানুষের উপাধি পাওয়া যাইত
ডিজিটাল যুগ: ভালো মানুষের উপাধি পাইতে হইলে সবার স্টেটাসে নিয়মিত লাইক-কমেন্ট করতে হয়!  

এনালগ যুগ: যারা চলতে অক্ষম তারাই স্টিক নিয়া চলাফেরা করত

ডিজিটাল যুগ: প্রায় সব বয়সের লোকদেরই সেলফি স্টিক হাতে নিয়া ঘুরতে দেখা যায়

প্রথম প্রকাশ: ঘোড়ার ডিম, কালের কণ্ঠ
(২৪ মে ২০১৬)

কান ধরিয়েও বাহবা পেতেন, যদি...

ম্প্রতি এক শিক্ষককে কানে ধরিয়ে ওঠ-বস করিয়ে দেশজুড়ে নিন্দিত হয়েছেন কতিপয় ব্যক্তিতো, এই কানে ধরার শাস্তিটা একজন শিক্ষককে না দিয়ে যাদের দিলে ওনারা নিন্দার বদলে সবার বাহবা কুড়াতে পারতেন, চলুন দেখি তাদের তালিকা-


সেসব বখাটেকে কান ধরিয়ে রেখে শাস্তি দেওয়া যেত, যাদের কারণে স্কুল-কলেজের মেয়েরা উত্ত্যক্ত হয়ে কেউ কেউ পড়ালেখাই ছেড়ে দিয়েছে
সেসব মোটরসাইকেলের আরোহীর কান ধরিয়ে ওঠ-বস করানো যায়, যারা ফুটপাথকে নিজের বাপের সম্পত্তি মনে করে তাতে বাইক উঠিয়ে দু-একজন পথচারীকে আহত করে ফেলে
সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কান ধরে ওঠ-বস করানো উচিত ছিল, যাদের টেবিলের নিচে দিয়ে পকেটে টাকার বান্ডিল পুড়ে না দিলে ফাইল টেবিল থেকে একটুও নড়ে না
সেসব ফোন কলারকে যারা ফোন দিয়ে অন্যকে লাখো-কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি পেয়েছে বলে লোভ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়
সেসব ব্যবসায়ীকে, যারা অধিক মুনাফার জন্য চাল, ডাল, মসলার পাশাপাশি পাথর ও ইটের কণাকেও মানবখাদ্য মনে করে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে বাজারে ছেড়ে দেন
সেসব অজ্ঞান পার্টির লোককে, যারা চোখে সামান্য মলম লাগিয়ে একজন মানুষের সর্বস্ব লুটে নেয়
সেসব ধূমপায়ীকে কান ধরে ওঠ-বস করানো উচিত, যারা পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষেধ জেনেও কাউকে পরোয়া না করে নিজের ইচ্ছেমতো ধূমপান করে লঞ্চ কিংবা স্টিমারের মতো ধোঁয়া ছেড়ে যায়
যারা ফল-ফলাদিতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যু কিংবা মরণঘাতী অসুখের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তাদেরও প্রকাশ্যে কান ধরিয়ে ওঠ-বস করানো যেত
সেসব সিনেমা পরিচালকদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা যায়, যারা বিদেশি চলচ্চিত্র নকল করতে করতে দেশি চলচ্চিত্র শিল্পকে প্রায় ধ্বংস করতে বসেছে
শিশুশ্রম দণ্ডনীয় জেনেও যারা শিশুদের দিয়ে অমানবিক শ্রম করাচ্ছে, তাদেরও উচিত সবার সামনে কান ধরিয়ে ওঠ-বস করিয়ে শাস্তি দেওয়া
সেসব লোককেও কান ধরে ওঠ-বস করানো যায়, যারা যৌতুক না পেয়ে নিরীহ মা-বোনদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করে

সামাজিক যোগাযোগ সাইট কিংবা অনলাইন নিউজ মাধ্যমগুলোকে যারা আজেবাজে লিংক ও ছবি শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে অশ্লীলতায় পূর্ণ করে ফেলেছে, তাদেরও কিন্তু শাস্তিস্বরূপ প্রকাশ্যে কান ধরিয়ে ওঠ-বস করানো যায়!
(২২ মে ২০১৬)

Wednesday, May 18, 2016

আমাদের শহর!


আমাদের বড় শহরে বড় বড় বাড়ি,
রাস্তায় মানুষের চেয়ে চলে বেশি গাড়ি

পাড়ার সকল ছেলে যে যার মতো চলে,
দশজনে দশ কথা একই টাইমে বলে

আলো নাই, ছায়া নাই, দূষিত বাতাস,
কোটি কোটি মানুষের এক শহরেই বাস

মাঠ ভরা পোলাপান খেলার জায়গা নাই,
মোবাইল আর কম্পিউটারে সবে গেমসে মজে তাই

আমগাছ, জামগাছ, সবার সাথে আড়ি,
বনভূমি কেটেই সেথা নির্মাণ হয় বাড়ি

সকালে সোনার রবি কোন দিকে যে ওঠে,
ইট-পাথরের এই শহরে যায় না বোঝা মোটে

(কবি বন্দে আলী মিয়ার আমাদের গ্রাম কবিতা অবলম্বনে প্যারোডি)

(১৮ মে ২০১৬)

তিন পয়সার গল্প!

প্রথম প্রকাশ: এনটিভি (অনলাইন)
(১২ মে ২০১৬)

Wednesday, May 11, 2016

আমাদের শিক্ষাবোর্ড!



আমাদের শিক্ষাবোর্ড
চলে ঢিলা-ঢালা
রেজাল্টের দিনেই তার
বাড়ে যত জ্বালা!

ক্রোম আর ফায়ারফক্স
ব্রাউজিংয়েই ফেইল
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরেও
নাই কোনো বেইল!

ব্রডব্যান্ড লাইনে আর
কুলায় না স্পিড
মাথা ঘুরায় মডেমের
বারে বার হয় ফিট!

এই যদি হয়রে ভাই
ডিজিটালের যুগ
লজ্জায় এনালগের

লাল হবে মুখ!

রবীন্দ্রনাথের ‘আমাদের ছোট নদী’ কবিতা অবলম্বনে প্যারোডি।

প্রথম প্রকাশ: এনটিভি (অনলাইন)
(১১ মে ২০১৬)