Wednesday, September 21, 2016

প্রেমরোগের এক ডজন লক্ষণ

সবাই বলে প্রেম নাকি একটা রোগ। আর রোগ হলে অবশ্যই এর কিছু লক্ষণ থাকার কথা। তো কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝতে পারবেন আপনি আসলে প্রেমের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, চলুন দেখে আসি। লিখেছেন— রবিউল ইসলাম সুমন

♦ জীবনে কখনো দেখার চেষ্টা করেননি আপনার চেহারাটা আসলে কেমন। অথচ এখন একটু পর পরই আয়নার কাছে গিয়ে নিজেকে দেখেছেন। 
♦ আগে মোবাইলে ১০-২০ টাকা রিচার্জ করলেই আপনার সারা মাস চলে যেত। অথচ এখন ডেইলি তিন-চারবার রিচার্জের দোকানে যেতে হয়। 
♦ মোবাইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতেন ক্যান্ডি ক্র্যাশ বা ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস গেম খেলতে খেলতে। অথচ এখন আর কোনো গেমসই খেলতে ইচ্ছা করে না। 
♦ বড় বড় জোকস শুনলেও আপনার মুখ থেকে হাসি বের হয় না। অথচ এখন কোনো কারণ ছাড়াই আপনি একটু পর পর হেসে ওঠেন। 
♦ কাকের মতো কর্কশ কণ্ঠ বলে আপনি ভুলেও কখনো গান গাননি। অথচ এখন কে কী ভাবছে, না ভাবছে— সেসব কেয়ার না করেই নিজে নিজে গুনগুনিয়ে গেয়ে ওঠেন। 
♦ রাত ২টা না বাজলে আপনি কখনো রুমের লাইট নেভান না। অথচ এখন ১০টা না বাজতেই লাইট নিভিয়ে মোবাইলে গান শোনেন বা গুনগুনিয়ে কথা বলেন। 
♦ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাবাজি না করলে আপনার চলতই না। অথচ এখন কেমন জানি একা একা থাকতে ইচ্ছা করে। 
♦ মোবাইল আর পিসিতে পুরনো সব ছবি, গান, ভিডিও মুছে দিয়ে বেছে বেছে কেবল রোমান্টিক মুভি, গান বা ছবি সেইভ করে রেখেছেন। 
♦ তুচ্ছ ঘটনায় অনেক হৈহুল্লোর করে বসেন কিংবা বিশাল কোনো ঘটনাকে তুচ্ছ মনে করে এড়িয়ে চলে যাচ্ছেন। 
♦ পার্কে কপোত-কপোতীদের তো বটেই, গাছের ডালে দুটি পাখি একত্রে বসে থাকতে দেখলেও আপনি কোথায় যেন হারিয়ে যান, আপনাকে কেউই খুঁজে পায় না। 
♦ একটা সময় এক কাপড়ে আপনি তিন দিন থেকেছেন। অথচ এখন কারণ ছাড়াই একটু পর পর পোশাক চেঞ্জ করতে আপনার ভালো লাগছে। 
♦ ঘণ্টায় ঘণ্টায় স্টেটাস না দিলে আপনার শান্তি লাগত না। অথচ এখন সারা দিনেও আপনাকে ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যায় না।

প্রথম প্রকাশ: ঘোড়ারডিম, দৈনিক কালেরকণ্ঠ
(২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬)

ঈদ অনুষ্ঠানমালার যত বিড়ম্বনা...

যারা ঈদ অনুষ্ঠানমালা দেখেছেন তারা একটু হলেও জানেন অনুষ্ঠান দেখার বিড়ম্বনা কী এবং তা কত প্রকার। আর যারা জানেন না তাদের জন্যই এই আয়োজন। সঙ্গে আছেন— রবিউল ইসলাম সুমন

— একটু শান্তিমতো বসে বিজ্ঞাপন দেখবেন তার উপায় নেই। মাঝেমাঝে নাটক-সিনেমা চলে আসবে আপনাকে বিরক্ত করার জন্য।

— টেলিভিশনে একটা নাটকের অনুষ্ঠানসূচি মোট যতক্ষণ দেখায়, হিসাব করলে দেখবেন ওই নাটকের  দৈর্ঘ্য তার চেয়ে কমই আছে।

— সব চ্যানেলে একই অভিনেতা-অভিনেত্রীর মুখ দেখতে দেখতে ভুলেই যাবেন কোনটা কোন অনুষ্ঠানের অংশ ছিল।

— একবার কোনো অনুষ্ঠান স্কিপ করে গেলে সেটা আর দ্বিতীয়বার খুঁজে বের করার চেষ্টা বৃথা হয়ে যাবে।

— টেলিভিশনগুলা যতই ৭ দিন, ৮ দিন বা ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বলুক না কেন- রিমোট চেপে চ্যানেল নাড়তে গেলেই দেখবেন প্রতিটা চ্যানেলে হয় বিজ্ঞাপন নয়তো অনুষ্ঠানসূচি  দেখানো হচ্ছে।

— প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠান দেখার পরে এর মান দেখে মনে হবে এতক্ষণ শুধু ফাও ফাও অপচয় করলেন।

প্রথম প্রকাশ: রকমারি রম্য, বাংলাদেশ প্রতিদিন
(১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬)

সোশ্যাল মিডিয়া হাসপাতাল!



সোশ্যাল মিডিয়া এখন সবার কাছেই যোগাযোগের জনপ্রিয় একটা মাধ্যম। আর হাসপাতাল হচ্ছে সবার খুবই প্রয়োজনীয় একটা জায়গা। তো এই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড যদি সোশ্যাল মিডিয়ার নামের সঙ্গে মিলিয়ে নামকরণ করা হতো, তবে কোন ওয়ার্ড কেমন এবং কিসের জন্য ব্যবহৃত হতো চলুন দেখে আসি

গুগল রিসিপশন
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং রোগীদের যাবতীয় তথ্য খুঁজে বের করার জন্য এটা বেশ কাজে লাগত!
ফেসবুক কেবিন
ফেসবুকের সেলিব্রিটি আর নন-সেলিব্রিটিদের মতো এখানে থাকবে ভিআইপি আর সাধারণ রোগীদের জন্য আলাদা আলাদা কেবিন বা থাকার ব্যবস্থা।
ইউটিউব ওটি
যেখান থেকে অপারেশনের চিত্র টিভি স্ক্রিনের মাধ্যমে লাইভ রোগী বা হাসপাতালের অন্যান্য মানুষদের দেখানো হবে রোগীর হালচাল।
প্রিন্টারসেট বিল সেকশন
হাসপাতালের যাবতীয় বিল এবং ওষুধের তালিকা প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহৃত হবে ওয়ার্ড।
লাইন কাউন্টার
যেখানে ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য রোগীদের দাঁড়াতে হবে লম্বা লাইনে!
টুইটার ডেস্ক
রোগীর রিলিজ বা ডিসচার্জ বার্তা দেওয়া হতে পারে হাসপাতালের এই ডেস্ক থেকেই।

লেখা ও আঁকা: রবিউল ইসলাম সুমন
প্রথম প্রকাশ: এনটিভি (অনলাইন)
(১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬)

Friday, September 9, 2016

গরুর হাটের জন্য, দরকারি সব পণ্য!

জমে উঠেছে গরুর হাট। আপনি নিশ্চয়ই হাটে যাওয়ার কথা ভাবছেন? যদি তাই হয় তবে হাটে যাওয়ার আগে আপনাকে কী কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হতে পারে চলুন দেখে আসা যাক :

বুট জুতা
মানুষের জন্য পাবলিক টয়লেট থাকলেও গরুর জন্য তো আর নেই। তাই গরুরা যেখানে সেখানে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারে। কিন্তু গরুর গোবরে পা দিয়ে যেন সাড়ে সর্বনাশ না হয় সেজন্য হাটে যাওয়ার আগে আপনাকে মোটামুটি ভালো মানের একজোড়া বুট জুতা পরে বের হতে হবে। এ ছাড়া এটি আপনাকে রাস্তার কাঁদা আর নোংরা পানির হাত থেকেও বাঁচাতে সক্ষম হবে।
মুখের মাস্ক
যেখানে সেখানে আবর্জনা আর গরু-ছাগলের মলমূত্র ফেলার কল্যাণে হাটের চারপাশে তো বটের আশপাশের দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। আর এই দুর্গন্ধের কবল থেকে বাঁচতে হলে সব জানতে না হলেও অন্তত মুখে মাস্ক পরাটা আপনাকে জানতেই হবে!
বডি স্প্রে
শুধু নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবলেই হবে? আশপাশের মানুষের কথা ভাবতে হবে না? আপনার গায়ের বিশ্রী দুর্গন্ধ শুকে যেন আশপাশের মানুষ ও হাটের গরুরা বেহুশ হয়ে না পড়ে এ জন্য অবশ্যই আপনাকে গায়ে ভালো কোনো কোম্পানির বডি স্প্রে মেখে হাটে যেতে হবে।
ঢাল
গরু আমাদের শুধু দুধ-মাংসই দেয় তা কিন্তু নয়, মাঝে মাঝে কিন্তু গুঁতাও দেয়! গরুর গুঁতা খাওয়া থেকে বাঁচতে হলে ঢাল হিসেবে আপনাকে পিঠে ছালা নয়তো স্টিলের থালা বেঁধে যেতে হবে। নইলে কিন্তু গুঁতা খেয়ে ফিলিংস ভোতা হয়ে যাবে!
পেইনকিলার
গরুর হাটে যাবেন আর গরুর লাথি খাবেন না তা কি হয়? আর লাথি খেলে আপনার হাঁড়-মাংস তো বটেই গিড়ায় গিড়ায় পর্যন্ত ব্যথা করবে। আর তাই ব্যথা রোধে আগাম পেইনকিলার ম্যানেজ করে রাখতে পারেন নিজের পকেটে।
লেখা ও আঁকা: রবিউল ইসলাম সুমন
প্রথম প্রকাশ: এনটিভি (অনলাইন)
(৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬)

অলিম্পিকে আমরা কেন সোনা পাই না...

শেষ হয়েছে খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আসর অলিম্পিক। তো, এই অলিম্পিকে বাংলাদেশ কখনোই সোনার মেডেল অর্জন করতে পারেনি। কেন পারেনি? সেটার কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ নিচে দেওয়া হলো। দয়া করে এতে কেউ কিছু মনে করবেন না। এটি একটি সোনায় মোড়ানো মজা মাত্র! তো, চলুন জানি কেন আমরা সোনা জিতি না অলিম্পিকে।

১. আমাদের দেশে সোনার ছেলের কোনো অভাব নেই। আর তাই সোনার ছেলেদের চোখে সোনার মেডেল তুচ্ছ খনিজ পদার্থ বৈকি আর কিছুই নয়। এ জন্য তারা সোনা জিততে অনাগ্রহী বলা যায়।
২. দেশের বিমানবন্দরে দুদিন বাদে বাদেই বিপুল পরিমাণে সোনা আটকের খবর পাওয়া যায়। আর তাই নতুন করে সোনা জিতে এনে নিউজ ছড়ানোর আগ্রহ কেউ প্রকাশ করছে না।
৩. দেশের চোর-ছেচ্ছর আর ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্যের কারণে হাতের সোনার আংটি কিংবা গলার সামান্য সোনার চেইন নিয়েই রাস্তায় চলা মুশকিল। আর তাই সোনা জিতলেও সেটা নিয়ে থাকতে হবে নানান ভয়ে। এ জন্য সোনা জেতায় পিছিয়ে আছে সবাই।
৪. কয়েক দিন পরপরই টিভিতে সোনার মূল্য কমতে দেখা যায়। আর তাই অল্প দামের সোনা জেতার পরিশ্রমটাই বৃথা, এ রকম ভেবেই হয়তো কেউ সোনা জিততে চাইছে না।
৫. যে দেশের মাটি সোনার চেয়ে খাঁটি হয়, সে দেশে সামান্য সোনার মেডেল জিতে কী হবে? এ জন্যই কেউ সোনা জিততে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
৬. আমাদের দেশে সোনার মেডেলের চেয়ে সোনার হরিণ... মানে চাকরিজীবীদের সম্মান অনেক বেশি। আর তাই সোনার মেডেল ছেড়ে সবাই সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে ভালোবাসে বলেই অলিম্পিকের সোনাকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না।
৭. অনেকেই আছেন বেশ প্রচারবিমুখ। আর সোনা জিতলে যদি তাকে মিডিয়ার সামনে ঘন ঘন ইন্টারভিউ দিতে হয়, এ ভয়েই কেউ সোনা জিততে চাইছে না।
প্রথম প্রকাশ: এনটিভি (অনলাইন)
(২৭ আগষ্ট ২০১৬)

প্রেমিকা দিবসে যা হতে পারে...

আগে কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশি ছিল। আর এখন দিনের চেয়ে দিবস বেশি। মানে বছরের ৩৬৫ দিনের প্রায় প্রতিটি দিন তো বটেই, একই দিনে একাধিক দিবস অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ এলো প্রেমিকা দিবস! তো, এই দিবসে কী কী হতে পারে, চলুন দেখে আসি। সঙ্গে আছেন— রবিউল ইসলাম সুমন

— প্রপোজ করলেই প্রেমিকা হয়ে যাবে—এমন তত্ত্ব অ্যাপ্লাই করতে গিয়ে গালে বায়োমেট্রিকের ছাপ নিয়ে ফিরবে অনেক সিঙ্গেল পোলাপান!
— প্রেমিকার এক্সট্রা আবদার পূরণ করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে ঘুরতে দেখা যাবে অনেক প্রেমিক পুরুষকেই।
— ডেটিং করতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে কাউকে কাউকে আবার দেখা যাবে হোটেলের থালাবাসন মাজতে!
— পার্ক ও লেকের আশপাশের জায়গাগুলো দিয়ে ছোট ছোট বাচ্চাকে নিয়ে হাঁটাচলা করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে!
— যাঁদের প্রেমিকা নেই, তাঁরা ফ্যামিলি-পরিজন থাকার পরও এই দিনটাতে নিজেকে মনে করবে একজন অনাথ কিংবা এতিমের মতো!
— রিকশাওয়ালাদের ডিমান্ড অনেক বেশি থাকবে। প্রেমিকার সঙ্গে রিকশা ভাড়া করতে গেলে দেখবেন, একেকজন রিকশাওয়ালার ভাব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চেয়েও বেড়ে গেছে।
— বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেলেও আপনার পরিবার ভাববে, আপনি প্রেমিকার সঙ্গেই টাংকি মেরে এসেছেন! প্রেমিকাসমেত এলাকার কারো চোখে ধরা পড়ে গেল আপনি যত ভালো ছেলেই হোন না কেন, সবার চোখে খারাপই প্রমাণ হয়ে যাবেন।
— মা-বাবার কাছে হাত খরচের টাকা চাইলেও তাঁরা আপনাকে সন্দেহ করে বসবে যে প্রেমিকার পেছনে টাকা ওড়াতে যাচ্ছেন!
প্রথম প্রকাশ: এনটিভি (অনলাইন)
(১ আগষ্ট ২০১৬)